বাংলাদেশের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির বৈধতা নিয়ে হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি পূর্ণাঙ্গ আদেশ প্রকাশ করেছে। আদেশে আদালত তিনটি দফা নির্দেশনা দিয়েছে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিবকে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিন দফা নির্দেশ:
- অনুসন্ধান কমিটি গঠন: আদালত ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বরের চুক্তি বিষয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে বলেছেন, যাতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও আইন বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। কমিটি গঠনের এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে এবং ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- চুক্তি প্রক্রিয়ার অনুসন্ধান: আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ২০১৭ সালের চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে কিনা, তা অনুসন্ধান করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
- নেগোশিয়েশন তথ্য জমা: চুক্তি সম্পাদনের আগে যদি কোনো দর-কষাকষি আলোচনা হয়ে থাকে, সে সম্পর্কিত সব তথ্য এক মাসের মধ্যে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে। এই তথ্য দাখিলের জন্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ৩০ দিনের মধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কারণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জন্য ভারতের অন্যান্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ অনেক কম খরচে পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতীয় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি ইউনিট ৫.৫ টাকায় বিদ্যুৎ পাওয়া যায়, অথচ আদানির সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ ১৪ টাকা ছাড়িয়ে যায়, যা অনেক বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তটি দেশের বিদ্যুৎ খরচ এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে, এবং সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ এবং পর্যালোচনা করতে সহায়তা করবে।